প্রকাশিত : শনিবার , ৩০ নভেম্বর ২০২৪ , সন্ধ্যা ০৬:৪২।। প্রিন্ট এর তারিখঃ শনিবার , ১৬ আগস্ট ২০২৫ , ভোর ০৫:৩৭
রিপোর্টার : নিজস্ব প্রতিনিধি:

মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে জনশক্তি রপ্তানি খাতে দূরাবস্থা


রিপোর্টার : the investor

 সৌদি আরবের পর বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার মালয়েশিয়া দু'দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত (Moll) মোতাবেক ২০২২ সালে আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে' পর্যন্ত লক্ষ ৭২ হাজার ৪৭৬ মালয়েশিয়ায় গমন করেন চাহিদা অনুযায়ী কর্মীর কোটা পুরণ হওয়ায় মালয়েশিয়া সরকার ০১ মার্চ ২০ তারিখের পূর্ব ঘোষিত সার্কুলার মারফত বাংলাদেশসহ কর্মী প্রেরণকারী ১৫টি সোর্স কান্ট্রি সমূহকে জানায় যে, তা ৩১ মে, ২০২৪ তারিখের পরে সাময়িকভাবে কর্মী গ্রহণ বন্ধ রাখবে ইস্যুকৃত ডিম্যান্ড লেটারের ভিত্তিজ মালয়েশিয়ায় কাজে যোগদানকারী কর্মীদের সেক্টর ভিত্তিক পরিসংখ্যান নিয়ে পরবর্তীতে খাত ভিত্তিক নুতন চাহিল নিরূপণের পর কর্মী নিয়োগের লক্ষে মালয়েশিয়া সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলে জানা যায়

এক মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে এই মর্মে অবহিত করেন যে, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরনকারী ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সীর অধিকাংশই কর্মীদেরকে সরাসরি বা সহযোগী এজেন্সির মাধ্যমে কর্মীদের অর্থ ফেরত দানের ব্যবস্থা করেছেন তবে সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সি সমূহ ২৫ শতাংশের মতো কর্মীদের অর্থ ফেরত প্রদান করেছেন মাননীয় উপদেষ্টা ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সি এবং বিশেষত: সহযোগী এজেন্সি সমূহকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কর্মীদের অর্থ ফেরত দানের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন

প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, তালিকা বহির্ভূত (মালয়েশিয়া সরকারের অনুমোদনহীন) রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়োগকারীর নিকট হতে ভিসা ক্রয় করে Dummy Demand Letter এবং Power of Attomey নিয়ে কর্মী সরবরাহ নির্বাচনের অধিকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে, ফলে তালিকাভুক্ত এজেন্সি সমূহ নিয়োগকারীর ক্ষমতা প্রাপ্ত প্রতিনিধির নিকট হতে কর্মী গ্রহণ করতে বাধ্য হয় এবং তালিকাভুক্ত এজেন্সি হিসাবে শুধুমাত্র প্রসেসিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হয় কর্মী নির্বাচনে সরাসরি তালিকাভুক্ত এজেন্সি সম্পৃক্ত না থাকায় মালয়েশিয়ায় অভিবাসনের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশেই অনুমোদনহীন এজেন্সির কাছে চলে যায় এই সুযোগে তারা অভিবাসন ব্যয় ইচ্ছা অনুযায়ী সীমাহীনভাবে বৃদ্ধি করে এবং এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে লক্ষ টাকা বা ততোধিক টাকা আদায় করে থাকে অনুমোদনহীন সকল এজেন্সি নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চড়া দামে (বে-আইনিভাবে) ভিসা ক্রয় করে এবং কর্মীর নিকট হতে এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে অবৈধ পন্থায় নিয়োগকর্তাকে পরিশোধ করে অথচ পুরো বিষয়টির দায়- দায়িত্ব অনুমোদিত ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সির উপর চাপানোর চেষ্টা করেছে

তবে দুঃখের বিষয় যে, বর্তমান সচিব মিটিং-এর সিদ্ধান্তের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এবং সমস্যার বাস্তব সমাধানের দিকে না গিয়ে তালিকাভুক্ত ১০১ টি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং যে এজেন্সির নামে বিএমইটি ছাড়পত্র গ্রহণ করা হয়েছে উক্ত এজেন্সিকেই সমুদয় অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয় সচিব' এই নির্দেশনা মিটিং এবং বিজ্ঞ উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশনার সম্পূর্ণ বিপরীত অনুমোদিত এজেন্সি সমূহ ইতঃমধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক কর্মীদের প্রদত্ত অর্থ এবং পাসপোর্ট সরাসরি বা সহযোগী এজেন্সির মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে এমতাবস্থায়, পুনরায় কর্মীদের অর্থ পরিশোধ করা অনুমোদিত এজেন্সির পক্ষে সম্ভবপর নয়

স্মর্তব্য যে, বর্তমান সচিব মহোদয় এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর ০২ মাস যাবত মন্ত্রণালয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেননি তার কাছে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য গেলে তিনি বলেছেন, আমি এই মন্ত্রণালয়ে নতুন, মন্ত্রণালয়ের কাজ বুঝতে দুই-এক মাসের সময় প্রয়োজন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক সত্যয়ন করা ডিম্যান্ড লেটার সমূহকেও তিনি দুই মাস যাবত আটকে রাখেন সিদ্ধান্ত দেওয়ার জনা ফলে ২০২৩ সালের সত্যায়িত ডিম্যান্ড লেটারের অনুকূলে ২০২৪-এর মার্চ মাসে নিয়োগানুমতি পেয়ে কর্মী বাছাই, কলিং ভিসা এবং e-Visa পাওয়ার পর মে মাসের আগে এসকল কর্মীর বিএমইটি ছাড়পত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি অতঃপর মে মাসে টিকেটের তীব্র সংকটের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ৪৫,০৩১ বাংলাদেশী কর্মীকে প্রেরণ করা সম্ভব হয় অন্যদিকে অন্য সকল ১৪টি সোর্স কান্ট্রি হতে যে' মাসে গমন করে ৪৪,০৭৫ জন কর্মী

মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডঃ আসিফ নজরুল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করার সাথে সাথেই সার্বিক বিষয়টি উপলব্ধি করে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত এবং সিদ্ধান্তের আলোকে দূতাবাস সমূহের শ্রম উইং কর্তৃক সত্যায়িত ডিম্যান্ড লেটার পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের নিয়োগানুমতি গ্রহণের প্রথা বিলুপ্ত করে জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়ায় সময় (Lead Time) কমানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের অর্থ ফেরত দানের ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানি খাতের এজেন্সি সমূহ মাননীয় উপদেষ্টা . আসিফ নজরুল মহোদয়ের এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন তবে মিটিং-এর সিদ্ধান্ত এবং মাননীয় উপদেষ্টা ডঃ আসিফ নজরুল' বাস্তবসম্মত নির্দেশনার বাইরে গিয়ে সচিব জনাব মো: রুহুল আমিন-এর মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে রিক্রুটিং এজেন্সি সমূহ নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে এবং একইসাথে জনশক্তি রপ্তানি খাতকে জাটল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন