
জাটকা ধরা বন্ধে দিনরাত অভিযান, সচেতনতামূলক সভাসহ মৎস্য বিভাগের কোনো উদ্যোগই কার্যকর হচ্ছে না। থামানো যাচ্ছে না ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর জাটকা নিধন। নিষিদ্ধ জালে ধরা এসব জাটকা নদীর পাড়ে হাঁক ডেকে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। থেমে নেই জেলা ও উপজেলা সদরের হাট বাজারে বেচাকেনাও।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ধরা ও বেচাকেনার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন। এতে ইলিশ উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে আইন প্রয়োগে আরও কঠোর হওয়ার গতানুগতিক কথাই বলছে মৎস্য বিভাগ।
ভোলার শিবপুর মাছঘাটে দেখা যায়, চার থেকে ছয় ইঞ্চি লম্বা ইলিশের পোনা (জাটকা) বিক্রির জন্য ঝুড়িতে সাজাচ্ছেন এক ব্যাপারী। অথচ ১০ ইঞ্চির নিচের ইলিশের পোনা ধরা ও বেচাকেনা দণ্ডনীয় অপরাধ। হালি ১০০ থেকে ১১০ টাকায় কেনা এ জাটকা কয়েক মাস পরে তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হতো। বাড়তো ইলিশের পরিমাণও।
মৎস্য বিভাগের ঘাট পাহারাদারের উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা নদীতে ধরা জাটকা নিয়ে একের পর এক নৌকা ও ট্রলার তীরে ভিড়ছে। সেই জাটকা ঝুড়ি ভরে নেয়া হচ্ছে আড়তগুলোতে। সেখানে হাঁক-ডাকের মাধ্যমে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। কেনাবেচায় সরগম মাছঘাট। এর মধ্যে ইলিশ সম্পদ রক্ষা প্রকল্পের কর্মকর্তাদের আসার খবরে মাঝ পথেই জাটকা উঠানামা ও বেচাকেনা বন্ধ করে দেয় আড়ত মালিক ও ব্যাপারীরা।
এদিকে ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে ও জাটকা রক্ষায় দিনরাত অভিযান পরিচালনা করছে মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিষিদ্ধ জালসহ ধরাও পড়ছেন শিকারিরা। সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহফজুল হাছনাইন জানান, ডিসেম্বরের মাছ থেকে মেঘনা নদীতে জাটকা বেড়েছে। এ সময় বরিশাল, শ্রীপুর, মেহিন্দীগঞ্জসহ পাশের এলাকার জেলেরা ছোট ফাঁসের জালে জাটকা ধরছে। অবৈধ জাল জব্দ করার পাশাপাশি জাটকা ধরা থেকে বিরত রাখতে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাটকা সংরক্ষণ বিষয়ে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য অভিযান জোরদার করা হচ্ছে।’ আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জাটকা সংরক্ষণে সবার সহযোগিতা চান তিনি।
জেলা মৎস্য অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, নদী অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। সাগরে অন্য মাছের সাথে কিছু জাটকা ধরা পড়লেও নদীর জাটকা ধরা বন্ধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় আরও কঠোর পদক্ষেপ নিবেন তিনি।
মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৯২ হাজার ম্যাট্রিক টন।