
আচমকা বাজার থেকে
হারিয়ে যায় বোতলজাত তেল। গতকাল সোমবার দাম বাড়ানোর এক ঘোষণায় সেই লুকানো তেলের বোতল
ফিরেছে দোকানে দোকানে; সেজেছে থরে থরে। বাজারে যেন এখন বোতলজাত সয়াবিনের স্রোত বইছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা
সেখ বশির উদ্দিন সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই খুলনাসহ
বিভিন্ন বাজারে দোকানে ভরে গেছে তীর, ফ্রেশ, পুষ্টি, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের
বোতলজাত সয়াবিন তেল। কয়েকটি বাজারে গতকাল রাতে পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেল ৮৪০ থেকে ৮৫০
টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। তবে ওইসব বোতলে দাম লেখা ৮১৮ টাকা।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ‘সয়াবিন-কাণ্ড’ ঘটিয়ে সংকট দেখিয়ে সরকারকে চাপে ফেলে একদিকে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছেন, অন্যদিকে এই ক’দিন নানা অপকৌশলে ক্রেতার পকেটে ছুরি চালিয়ে টাকা লুটেছেন। আজ তেল, কাল চিনি, পরশু হয়তো অন্য কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সুবিধা করে নিচ্ছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। ফন্দি এঁটে কয়েক দিন ক্রেতার নাভিশ্বাস তুলে সরকারকে জিম্মি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে। অতীতেও ঘটেছে এমন ঘটনা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এমন কাণ্ড অপ্রত্যাশিত।
বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়ানো ও দাম স্বাভাবিক রাখতে অন্তর্বর্তী সরকার
গত ১৭ অক্টোবর অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পরিশোধিত পাম অয়েল ও সয়াবিন বীজ– এই তিন পণ্য আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
১৯ নভেম্বর স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে আরও ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে শুধু আমদানি
পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রাখে। তাতে বোতলজাত ও খোলা উভয় তেল লিটারে ১২ থেকে ১৩ টাকা
কমার কথা। তবে বাজারে সেই পরিস্থিতি দেখা যায়নি। বরং কয়েক দিন ধরে বাজারে তেলের
সংকট ছিল। ব্যবসায়ীরা লুকিয়ে পরিচিত ক্রেতাদের কাছে লিটারে ১০ থেকে ১২ টাকা বেশি
দামে বিক্রি করছে। এ পটভূমিতে গতকাল বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার ঘোষণা
এলো। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার চার মাসের মাথায় এই প্রথম ভোজ্যতেলের দাম
বাড়ল।
তেলের দাম এমন সময়ে বাড়ানো হলো যখন খাদ্য মূল্যস্ফীতিও
অস্বাভাবকি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, গত নভেম্বরে
খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তার ওপর
চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।