প্রকাশিত : মঙ্গলবার , ১ জুলাই ২০২৫ , দুপুর ০১:৫৩।। প্রিন্ট এর তারিখঃ শনিবার , ১৬ আগস্ট ২০২৫ , বিকাল ০৪:৩১
রিপোর্টার : খুলনা ডেস্ক

৮৬-তে পা দিলেন সংগীত কিংবদন্তি সৈয়দ আব্দুল হাদী


রিপোর্টার : the investor

বাংলাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী ৮৬ বছরে পা রাখলেন। এক জীবনে সংগীতের যে পথ তিনি অতিক্রম করেছেন, তা বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। ১৯৪০ সালের ১ জুলাই জন্ম নেওয়া এই শিল্পী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে মেয়ের কাছে অবস্থান করছেন। জন্মদিন নিয়ে কোনো জমকালো আয়োজন নয়, বরাবরের মতো এবারও ঘরোয়া পরিবেশেই দিনটি কাটাচ্ছেন তিনি।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, জীবনকে যেভাবে পেয়েছেন, সেভাবেই মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছেন এবং কখনো নিজের জন্মদিন ঘটা করে পালন করেননি। বরং জীবনের প্রান্তবিন্দুতে এসে তিনি উপলব্ধি করছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গান, মানুষ আর সম্পর্কের গভীরতা কতটা বদলে যায়।

গত এপ্রিল মাসে চ্যানেল আইয়ের আয়োজনে দীর্ঘদিন পর তার কণ্ঠে নতুন চারটি গান প্রকাশিত হয়। ‘জীবনের গান’ শিরোনামে অনুষ্ঠানটিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের সঞ্চালনায় অংশ নেন তিনি। শিল্পীর ভাষায়, আর নতুন গান না গাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল তার। কিন্তু চ্যানেল আইয়ের ফরিদুর রেজা সাগর ও আজম বাবুর আন্তরিক আহ্বান আর দীর্ঘদিনের বন্ধু গীতিকবি রফিকউজ্জামানের আবেগময় একটি গান তাকে আবারও মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড় করায়।

জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আইয়ের ‘গান দিয়ে শুরু’ অনুষ্ঠানে আজ বিশেষ পর্ব প্রচারিত হচ্ছে, যেখানে সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া কালজয়ী গানগুলো পরিবেশন করবেন তরুণ শিল্পীরা। পাশাপাশি তার জীবন, কর্ম ও সংগীতযাত্রা নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র ও শুভেচ্ছাবার্তাও প্রচারিত হবে।

সৈয়দ আব্দুল হাদীর সংগীত জীবন শুরু ষাটের দশকে। তার গাওয়া ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘চোখ বুজিলে দুনিয়া আন্ধার’, ‘যেও না সাথি’, ‘চক্ষের নজর এমনি কইরা’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’ কিংবা ‘আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার বারিস্টার’ এসব গান আজও মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে আছে।

তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়কের সম্মান অর্জন করেছেন এবং ২০০০ সালে পেয়েছেন একুশে পদক। সর্বশেষ ২০২৪ সালের মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন।

পরিবার, ভক্ত ও সহকর্মীদের কাছে তিনি কেবল একজন গায়ক নন, একজন শ্রদ্ধেয়, প্রেরণাদায়ী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তার স্ত্রী ফখরুন্নাহার সবসময় পাশে ছিলেন, ছিলেন তার পথচলার নিরব সাক্ষী। আজীবনের এই শিল্পযাত্রা কেবল গান নয়, এটি এক মানুষের স্বপ্ন, সংগ্রাম আর সাধনার প্রতিচ্ছবি।