দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে চাকুরী করার সুবাদে বেপরোয়া দুর্নীতি করে নিজের আখের গুছিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটিকর্পোরেশনে খাদ্য ও সেনিটেশন বিভাগে কর্মরত দীপক মজুমদার। মহামারী করোনার সময় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিদেশী অনুদানের সরঞ্জাম পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সূত্র মতে ২০২০-২৩ সালে তিনি ও তার স্ত্রী মিলে করোনার সময় সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৫ লক্ষাধিক জনতার ব্যবহার্যে দ্রবাদি যেমনঃ গ্র্যান্ডস, হ্যান্ড ওয়াশ, সর্ট মোজা, বডি সেভিং ইউনিফর্ম, সাবান, পাউডার, সুগন্ধী, তোয়ালে, মাক্স, পানির ড্রাম, লাইন সিপি, ব্যবহৃত গজ, তুলা এবং যাবতীয় সরঞ্জামাদি আত্মসাৎ করে। ৫ লক্ষাধিক জনতার প্রত্যেকের জন্য সাড়ে চার হাজার টাকা করে চার কিস্তিতে আসা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন সেনিটারী ইন্সপেক্টর দীপক মজুমদার।
অন্যদিকে পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনে প্রায় ১৫ বছর চাকুরীতে অবস্থান করে তার দুর্নীতির সীমা আকাশ সমান হয়ে ওঠে। মশা নিরোধক কাজে জনবল নিয়োগসহ অন্যান্য জিনিসপত্রেও তার দুর্নীতি চরম শিখরে পৌঁছেছে। খাদ্য ও সেনিটেশন পদবী ব্যবহার করে দুই ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন তিনি। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বিসিক শিল্প নগরীসহ স্থানীয় বেকারী গুলোতেও তার চাঁদাবাজী অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়ে অনেকে। মিষ্টির দোকান থেকে শুরু করে পাঁচ সহশ্রাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজী চলমান, যেখানে প্রায় কোটি টাকা মাসে অবৈধ বাণিজ্য করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন দীপক মজুমদার।
অতীতে জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদেও তার দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়। আপ্যায়ন খাত এবং ছোট খাটো পৌর মিটিং সহ বিভিন্ন খাতে বেপরোয়া ভাউচার সৃজন করে সিটি ফান্ড থেকে অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগ রয়েছে তার । তার নানা অপকর্মে খোদ কর্তৃপক্ষ নাখোশ ছিলেন এবং তার দুর্নীতির হিসাব নিকাশে মেয়র ইকরামুল হক টিটু দীপকের দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রাক্কালে অর্থাৎ পাঁচ আগষ্ট দেশের সরকার পরিবর্তন হওয়ায় তিনি সাপে বরে উন্নীত হন। শুধু তাই নয়, বতর্মান সময়ে আরো বেপরোয়া হয়ে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর স্ত্রী পিতাকে মুক্তি যোদ্ধা বানিয়ে সেই কোটায় স্ত্রীকে চাকুরী দেওয়া হয়। এরপর পৌর ফান্ডের অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পর মিথ্যা ভিত্তিহীন মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রমাণ না থাকায় লজ্জায় সিটি কর্পোরেশনে এ বিষয়ে নানা কথার ঝড় ওঠে। পরে এটি সিটি কর্পোরেশনের সিইও ইউসুফ’র মাধ্যমে বিশ লাখ টাকায় রফাদফা করে চাকুরী থেকে নিজ স্ত্রীকে বাসায় পাঠিয়ে দেন তিনি।
এদিকে তার স্ত্রীর নকল চাকুরীর ফাইল প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার নন্দির মাধ্যমে গায়েব করেন দীপক মজুমদার। পাশাপাশি বসা দুই দুর্নীতিবাজ ভাইরাল হবার অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানাগেছে। এরপরও দীপক মজুমদার সিটি কর্পোরেশনের চাকরিতে কিভাবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এটি একটি প্রশ্নবোধক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।। তার ভয়ানক দুর্নীতি, সিটি কর্পোরেশনে উন্নয়ন অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত হলেও আজ চারদিকে তুষের আগুনের মতো ফুসে উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি ময়মনসিংহে সমন্বয়কদের আসা যাওয়া নিয়ে তার ভিতরে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতির শিরোমণি দীপক মজুমদারের বিরুদ্ধে দুদকের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন তারই পালিত বেশ কয়েক জন। বিষয়টি নিয়ে দিপক মজুমদারের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। তার স্ত্রীর চাকরির ভুয়া কাগজপত্রের ফাইল গয়েবের বিষয় জানতে সহায়াতাকারী নন্দী বাবুকে ফোন করলেও তিনি জানান এর সাথে প্রধান সহকাারী জড়িত। এজন্য তদন্ত প্রয়োজন।