মুক্তিযুদ্ধে
বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পাকিস্তানী বাহিনী দেশীয় দোসরদের হাতে নির্মম হত্যার শিকার
শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ জাতির হাজারো মেধাবী সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা
নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার সকাল ৭টায়
মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁরা।স্মৃতিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর রাষ্ট্রপ্রধান
ও সরকারপ্রধান সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।এসময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
তারপর
সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়।
শহীদদের
প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার দেয় তিন বাহিনীর একটি দল।
তারপর
সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়।
শহীদদের
প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার দেয় তিন বাহিনীর একটি দল।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টামণ্ডলী, শীর্ষ বেসামরিক
ও সামরিক কর্মকর্তা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে
শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপ্রধান বলেছেন “দীর্ঘদিনের শোষণ, বঞ্চনা আর বৈষম্যের
বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতি ধীরে ধীরে মুক্তি সংগ্রামের
জন্য প্রস্তুত হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার সাথে সাথে গোটা জাতি
মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ছিনিয়ে
আনে চূড়ান্ত বিজয়।”
রাষ্ট্রপতি
আরো বলেন, “বস্তুত ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে
মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়জুড়েই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। তবে বিজয়ের প্রাক্কালে
১৪ ডিসেম্বর এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়।দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীদের সেই নির্মম
হত্যাকাণ্ড যে জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি ছিল, সে কথা তুলে ধরে সাহাবুদ্দিন
বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ
করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ এবং বৈষম্যহীন নতুন
বাংলাদেশ গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে বলে আমি মনে করি।”
প্রধান
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “বাঙালি জাতির বিজয়ের
প্রাক্কালে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক,
বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দেশের
মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা ও গুম করে।তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, মুনীর চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, শহীদুল্লাহ কায়সার, গিয়াসউদ্দিন,
ডা. ফজলে রাব্বি, আবদুল আলীম চৌধুরী, সিরাজউদ্দীন হোসেন, সেলিনা পারভীন, ড.
জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতাসহ আরও অনেকে।”
ইউনূস
আরো বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমি সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী
অপশক্তির যে কোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের
আহ্বান জানাচ্ছি।”
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি জাতির
শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বিভিন্ন রাজনৈতিক,
সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।