যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে গৃহহীনদের উচ্ছেদ অভিযানকে আরও জোরদার করতে কঠোর নির্দেশনা জারি করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সরকারি কাজে বাধা দিলে গৃহহীনদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জানানো হয়, রাজধানীতে নিরাপত্তা রক্ষায় গৃহহীনদের দখলে থাকা জায়গাগুলো থেকে তাদের উচ্ছেদ করাই এখন সরকারের অগ্রাধিকার। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিয়াভিট বলেন, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র, চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ থাকবে। তবে কেউ এসব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে, তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা বা হাজতবাসের মতো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
তিনি আরও জানান, রাজধানীর কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে গৃহহীনদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। এরইমধ্যে পার্ক পুলিশ মার্চ মাস থেকে প্রায় ৭০টি গৃহহীন শিবির উচ্ছেদ করেছে। চলতি সপ্তাহেই বাকি দুটি শিবির খালি করার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে গৃহহীনদের সহায়তাকারী সংস্থা মিরিয়ামস কিচেন–এর নীতিনির্ধারণী পরিচালক অ্যান্ডি ওয়াসেনিচ সতর্ক করে বলেছেন, কঠোর এই পদক্ষেপ নিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তাই গৃহহীনদের আপাতত সড়ক থেকে সরে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ওয়াশিংটনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন ট্রাম্প। সাময়িকভাবে ডিসি পুলিশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজের অধীনে এনেছেন তিনি। পাশাপাশি শহরে মোতায়েন করা হয়েছে ৮০০ ন্যাশনাল গার্ড ও ৫০০ ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি আগেই ওয়াশিংটন থেকে গৃহহীনদের উৎখাতের পরিকল্পনা করেছিলেন। তার ভাষায়, “গৃহহীনরা সহিংস গ্যাং, অপরাধী ও উন্মত্ত তরুণদের মতোই—যারা রাজধানী দখল করে রেখেছে।”
মার্কিন হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট (HUD)–এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এক রাতে যুক্তরাষ্ট্রে ৭ লাখ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ গৃহহীন ছিলেন, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। শুধুমাত্র ওয়াশিংটন ডিসিতে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ৫,৬১৬— যা আগের বছরের তুলনায় ১৪.১% বেশি। জনসংখ্যার অনুপাতে এটি দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশি: প্রতি ১০ হাজারে ৮৩ জন গৃহহীন।
এই অবস্থায় ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপ মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তবে প্রশাসন বলছে, তারা পুনর্বাসনের যথেষ্ট সুযোগ রেখে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।